স্টাফ রিপোর্ট।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থাটি।
সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের জীবন এক নাটকীয় উত্থান ও পতনের কাহিনি। ক্ষমতার উত্তরাধিকার হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করা এই ব্যক্তি একসময় সংস্কারের প্রতীক হিসেবে দেখা দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তিনি হয়ে ওঠেন একজন স্বৈরশাসক।
তার শাসনামল চিহ্নিত হয়েছে গৃহযুদ্ধ, গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য। অবশেষে, বিদ্রোহীদের চাপে এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের দুর্বলতায় তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতে হয়েছে।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিদ্রোহীরা প্রবেশ করেছে এবং তারা গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। দামেস্কের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে বিদ্রোহীরা।
এদিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছে, স্বাধীনতার স্লোগান দিচ্ছে এবং শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায় তারা হেঁটে ও গাড়িতে করে জড়ো হচ্ছে।
আলজাজিরার নিশ্চিত করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, দামেস্কের উমাইয়াদ স্কয়ারে পরিত্যক্ত সামরিক ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে একদল মানুষ গান গাইছে এবং আনন্দ প্রকাশ করছে। শহরের অন্যান্য এলাকাতেও এরকম উদযাপনের চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে, সিরিয়ার সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে যে, আসাদের শাসনের অবসান সিরিয়ার ইতিহাসে নতুন এক যুগের সূচনা করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছর ধরে চলা দমন-পীড়ন, ১৩ বছরের অপরাধ, নিপীড়ন ও স্থানচ্যুতির পর, আমরা আজ সেই অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছি। সিরিয়ার জন্য নতুন একটি যুগের সূচনা শুরু হলো।’
এটি সিরিয়ার দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের পর, দেশটির জন্য একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিদ্রোহীরা তাদের জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করেছে, যেখানে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলা সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে তারা এক নতুন শুরুর পথে পা রেখেছে।
সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স