দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজারে এসে হতাশা বাড়ছে ভোক্তাদের। সবজির বাজারে উত্তাপ সামান্য কমলেও বাকি পণ্যের দামে কোনো সুখবর নেই। চাল থেকে শুরু করে পেঁয়াজ, রসুন, আলুর মতো দরকারি পণ্যের চড়া মূল্য নিয়ে বেকায়দায় রয়েছেন বেশির ভাগ মানুষ। উচ্চমূল্যের বাজারে আমিষ খাওয়া ছেড়েছেন অনেকেই। মাছ-মাংসের সঙ্গে দামি খাবারের তালিকায় যোগ হয়েছে ডিম। সাশ্রয়ী হতে ডিম খাওয়া বাদ দিতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের এমন বাড়তি দামের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ।
বাজার চিত্র বলছে, মাসের ব্যবধানে চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সরু চালের মধ্যে মিনিকেটের কেজি ৭০ টাকার নিচে মিলছে না। আগে যা ৬৪ টাকায় পাওয়া গেছে। এখন এই চাল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চাহিদার শীর্ষে থাকা একটু ভালোমানের আটাশ চালের কেজি ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মধ্যবিত্তের চাল হিসেবে পরিচিত এই চাল আগে ৫৬ টাকায় পাওয়া যেত। আবার মোটা চাল দাম একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে স্বর্ণা (পাইজাম) চালের কেজি এক লাফে বেড়ে ৫৮ টাকা হয়েছে। আগে যা কমবেশি ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। মোটা চালের দাম বাড়ায় কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
রান্নায় দরকারি পেঁয়াজ-রসুনের বাজারও দীর্ঘসময় ধরে চড়া। দেশি পেঁয়াজের কেজি এখনো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের কেজি ২৪০ টাকা। আদার দামও ২০০-এর ওপরে। আলুর আগুন দাম নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে বেশি ক্ষোভ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আলুর কেজি ৬০ টাকাতে স্থির রয়েছে। দুই কেজি আলু কিনতে পকেট থেকে ১২০ টাকা উধাও। পরিস্থিতি বিবেচনায় আলু ও পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া আলু আমদানিতে থাকা ৩ শতাংশ এবং পেঁয়াজ আমদানিতে থাকা ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর প্রভাব এখনো বাজারে পড়েনি।
মাছের বাজারে দাম আগের মতোই চড়া। সস্তার পাঙ্গাশ কিংবা তেলাপিয়া কিনতে কেজিতে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে। কুচো চিংড়ির কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ পড়ছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষজন মাছের বাজারে সহসা পা বাড়াচ্ছেন না। আর মাংসের বাজারে গরু কিংবা খাসির স্বাদ এক রকম ভুলেই গেছেন তারা। ভরসা ছিল মুরগি। এখন সেটির দামও বাড়তি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও যা কমবেশি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাংসের সঙ্গে দামি খাবারে পরিণত হয়েছে ডিমও। দাম বেড়ে প্রতি ডজন ডিম এখন এক কেজি ব্রয়লার মুরগির প্রায় সমান হয়েছে। ফার্মের বাদামি ডিম ডজন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।