স্টাফ রিপোর্ট।
বাংলাদেশের মোট ১৪৮টি অ্যাকাউন্ট ও পেজ ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এই সামাজিক মাধ্যমটির মূল প্রতিষ্ঠান মেটা তাদের চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভুয়া পরিচয়ের এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজ বিষয়ে মেটা যে অনুসন্ধান করেছে তাতে এগুলোর সাথে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া এ রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ও একপেশে একটি রিপোর্ট, যা ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আশা করা যায় না। নীতিমালা লঙ্ঘন করলে যেকোনো অ্যাকাউন্ট বা পেজ তারা সরাতে পারে। কিন্তু সেটার সাথে আওয়ামী লীগ ও সিআরআইকে জড়ানোটা- বিভিন্ন পক্ষপাতদুষ্ট রিপোর্ট দিয়ে সুনাম ক্ষুণ্ণের যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে, সম্ভবত তারই অংশ। ফেসবুক যাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় বিশ্লেষণ করা উচিত ফেসবুকেরই, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তবে বিএনপি নেতা, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাত্তন কেন্দ্রীয় নেতা, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক জননেতা মাহবুব চৌধুরী বলেন শাসকগোষ্ঠী রাস্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ভূয়া, মিথ্যাইত সব করছে। আওয়ামীলীগ গত সংসদ নির্বাচনের আগেত বলেছিল তারা ফেইসবুকে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ এক্টিভিষ্ট নিয়োগ করবে। এরাইত এই জঘন্য মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। ফেইসবুক যা সরিয়েছে তা সামান্য, তদন্ত করে বাকী পেজ ও আইডি মুছে ফেলার অনুরোধ করছি ফেইসবুক কতৃপক্ষকে। কারন তাদের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা দিনরাত বিএনপি নিয়ে মিথ্যা কথা বলেন, মিথ্যা মামলা দেয়, এবং দুঃশাসনের সাথে দেশের মানুষের সাথে ও প্রতারনা করছে। যার কিছুটা ফেইসবুক কতৃপক্ষ ধরতে পেরেছে।
ফ্যাক্টওয়াচ সম্পাদক ড. সুমন রহমান বলছেন, বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো সামাজিক মাধ্যমকে নিজেদের প্রোপাগান্ডা মেশিন হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করে থাকে, বাংলাদেশও তার বাইরে নয়।
মেটা তার রিপোর্টে বলেছে, সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য আচরণের জন্য আমরা ফেসবুক থেকে পঞ্চাশটি অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ সরিয়ে ফেলেছি। এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজের মোট প্রায় ৩৪ লাখ ফলোয়ার ছিল। একই সাথে এসব পেজ থেকে প্রায় ৬০ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করা হয়েছে।
এর মধ্যে কিছু পেজ কাল্পনিক নতুন পরিচয় নিয়ে এবং অন্যগুলো বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর নাম ব্যবহার করতো। আবার কিছু পেজ বিএনপির নাম ব্যবহার করত এবং বিএনপিবিরোধী কনটেন্ট পোস্ট করত।
এসব ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর নেটওয়ার্ক ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার), টিকটক, টেলিগ্রাম ও তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটসহ একাধিক প্ল্যাটফর্মে রয়েছে বলে মেটার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘যদিও এগুলোর পেছনে থাকা ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় ও নিজেদের মধ্যকার সমন্বয়ের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমাদের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে, যারা এগুলোর সাথে জড়িত তাদের সাথে আওয়ামী লীগ ও সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন এর যোগসূত্র রয়েছে।