স্টাফ রিপোর্ট।
এনজিও-মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে বহু পরিবার সম্মানবোধের জায়গা থেকে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকে, বলছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানসিক চাপ বাড়ছে। বাড়ছে ঋণের বোঝা। দ্রব্যমূল্য দিনে দিনে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি এখন এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, যেখানে মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্তে পরিণত হচ্ছে। মানুষ এখন সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। যাদের সঞ্চয় নেই, তারা ঋণ করছে। ফলে মানুষের ওপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দিনে দিনে সংকট আরও বাড়বে। সাম্প্রতিক সময়ে ঋণের চাপ সইতে না পেরে বেশ কয়েকটি পরিবারে সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে এনজিও বা মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার।
অ্যামেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি জরিপে জানা গেছে, ৮৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর নিত্যকার জীবনের বেশির ভাগ মানসিক চাপের উত্সই হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। অনেকে ঋণ নিয়ে এই মানসিক চাপে পড়ছেন। এই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি না পেলে দৈনন্দিন জীবন ক্রমশ হয়ে উঠবে আরো দুর্বিষহ। মনোবিদেরা বলছেন, নিজের মনোযোগ কিছুটা সরিয়ে আনার মাধ্যমে মানসিক চাপ থেকে তাত্ক্ষণিক মুক্তি মিলতে পারে।
এনজিও ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে দেশীয় এনজিওর সংখ্যা ২ হাজার ৩১৮। এর মধ্যে অধিকাংশেরই আছে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি। এ ছাড়া গ্রামে গ্রামে আছে মাল্টিপারপাস কোম্পানি; আছে নানা সমিতি ও দাদন ব্যবসায়ী। দেশের ৩ কোটি ৫২ লাখের বেশি পরিবার ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবার আওতায় রয়েছে। ঋণ নেওয়ার পরের সপ্তাহ থেকে কিস্তি আদায় শুরু হয়। কৃষকের জমিতে ফসল ভালো না হলেও ঋণগ্রহীতাকে ঘরের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ঘটিবাটি বিক্রি করে সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। যখন তাতেও কুলায় না, তখন ভিটেমাটি ও ঘর বিক্রি করতে হয়। এমনও বহু ঘটনা ঘটেছে যে, কিস্তি আদায়কারীরা ঋণের দায়ে ঋণগ্রহীতার ঘর ভেঙে নিয়ে গেছেন।